মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকার
একটি দেশ। দুনিয়ায় আমেরিকা চিনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। বর্তমান বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের একটি হল আমেরিকা,
আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর ৩ইয় বৃহত্তম রাষ্ট্র হচ্ছে আমেরিকা। স্বপ্নের আমেরিকায় স্থায়ী হবার সাধ কার না থাকে ? আজকে আলাপ করবো কিভাবে আপনি ইউরোপিয়ান পাসপোর্ট দিয়ে আমেরিকায় সেটেল হতে পারবেন ?
- অনেকের জিজ্ঞাসা ভাই আমার ইউপিয়ান পাসপোর্ট আছে, আমি কি কানাডায়, আমেরিকায় সেটেল হতে পারব ?
অনেক মানুষের জিজ্ঞাসা এই বিষয় নিয়ে। অনেকের ধারনা ইউরোপিয়ান পাসপোর্ট হলেই সহজে আমেরিকা, কানাডায় সেটেল হওয়া যায়। বিস্তারিত লিখছি জাস্ট ধারনা দেয়ার জন্য প্রথম পার্ট লিখতে বসলাম ।
- আপনার প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে না। আপনি সহজে সেটেল হতে পারবেন না।
আপনি ইউরোপিয়ান সিটিজেশিপ থাকায় যে বেনেফিট পাবেন সেটা হল Visa Waiver Program (VWP) এর অধীনে ৩-৬ মাস থাকতে পারবেন। মিনিমাম ৩ মাস আমেরিকায় যদি ESTA (Electronic System for Travel Authorization) নিয়ে আসেন তাহলে ৩ মাস ম্যাক্সিমাম থাকতে পারবেন, আর যদি আমেরিকান দূতাবাস থেকে পাসপোর্টে ভিজিট ভিসা (B1/B2) নিয়ে আসেন তাহলে আমি ৬ মাসের এন্ট্রি পাবেন ( ভিজিট ভিসা ৫ বছরের মাল্টিপাল এন্ট্রি দিবে যদিও) প্রতিবার এন্ট্রির ক্ষেত্রে ৬ মাস থাকতে পারবেন।
আপনি যদি কোন কারণে আপনি ৬ মাসের বেশি থাকতে চান তাহলে আপনাকে আপনাকে অবশ্যই অন্য কোন নন আমেরিকান ভিসা ক্যাটাগরি অথবা গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার টাকা থাকলে আপনি ইনভেস্টর প্রোগ্রামে যেতে পারেন। অথবা EB সিরিজের যেকোনো একটি প্রোগ্রাম চয়েজ করতে পারেন। EB-1, EB-2, EB-3, EB-4, EB-5
এই প্রোগ্রাম গুলি মূলত ইউ, নন ইউ সকল দেশের নাগরিকদের জন্য সেট করা।
এখানে পাসপোর্ট কোন দেশের সেটা মুখ্য বিষয় না, বিষয় হচ্ছে কোয়ালিফিকেশিন , আর্থিক সক্ষমতা। আপনি যদি শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আমেরিকার দরজা খুলা আছে যে দেশের পাসপোর্ট ই বহন করেন না কেন। না হয় ২য় যে অপশন সেটা হচ্ছে আপনাকে আর্থিক ভাবে সক্ষম হতে হবে আমেরিকান গ্রিন কার্ড নেয়ার জন্য, সেটেল হবার জন্য।
EB-1, EB-2, EB-3 মূলত আপনার শিক্ষাগত যোগ্যটা অ প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স থাকলে আপনি ইলিজিবল হবেন। আর EB-4, স্পেশাল ক্যাটাগরি
EB-5 আর ইনভেস্টর প্রোগ্রাম যাদের কাড়ি কাড়ি টাকা আছে তাদের জন্য এটা মূলত। কোটি টাকা ইনভেস্তের মাধ্যমে গ্রিন কার্ড নেয়ার একমাত্র উপায় হল EB-5
তবে একজন জেনারেল লেভেলের লোক যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা মোটামুটি তারা চাইলে EB-3 এর অধীনে (non-skill worker) এর অধীনে গ্রিন কার্ড নিতে পারবেন। আগেই বলে রাখি আমার মত যদি সহ্য Dhorjo না থাকে তাহলে ভুলে টাকা ইনভেস্ট করবেন না গ্রিন কার্ডের পিছনে। অনেক লম্বা প্রসেস যারা ই গাবেন বুঝে শুনে যদি এই সময় অপেক্ষা করতে পারেন তাহলে প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
এব-৩ এর অধীনে গ্রিন কার্ডের প্রসেস শেষ হতে মোট সময় লাগবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে 24-29 মাস। যদি ৪-৬ মাস আগে পিছে হয় আপনি লাকি হবে। তবে এভারেজ টাইম ২২-২৪ মাস ধরে নেন আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে গ্রিন কার্ডের এপ্রুভাল থেকে শুরু করে কার্ড হাতে পাবার আগ পর্যন্ত।
-
কেন এমন সময় লাগবে ?
আমেরিকান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এই প্রোগ্রাম গুলো না শুধু মোটামুটি সব ইমিগ্রান্ট ভিসা কাতাগরিনিয়ে অনেক লম্বা সময় নিয়ে থাকে। ইউরোপ এর মত এত ফাস্ট কাজ করে না। আর eb3 প্রোগ্রামের অধীনে গ্রিন কার্ড নেয়া অনেক গুলো ধাপ পেরিয়ে ফাইনাল এপ্রুভাল আসে যার কারণে এখানে শুধু ইমিগ্রেশন এর কাজ ই শেষ না। কাজ শুরু হয় লেবাল ডিপার্টমেন্ট থেকে। লেবার সার্টিফিকেশান প্রসেস থেকে গ্রিন কার্ড এটা অনেক লম্বা একটা প্রক্রিয়া।
-
আমার কি স্পন্সর লাগবে আমেরিকান কোন ?
জি আপনি EB-3 এর অধীনে গ্রিন কার্ড নেয়ার মেইন শর্ত হল আপনাকে আমেরিকান কোন কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান কাজে নিয়োগ দিবে এমন স্পন্সর লাগবে।
স্পন্সর এর ক্ষেত্রে কিছু বিধি মালা আছে ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে। যেকেউ চাইলে আপনার স্পন্সর হতে পারবে না। তাহলে কারা পারবে ?
কেউ আপনাকে স্পন্সর করতে চাইলে তার কোম্পানির বয়স মিনিমাল ২ বছরের পুরাতন হতে হবে। এবং তার নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্স ফাইল থাকা লাগবে। এখন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের জন্য বছরে ৪৫০০০ ডলারের ট্যাক্স ফাইল থাকা বাধ্যতামূলক।
বিজনেস ঊর্ধ্বমুখী এমন ব্যাল্যান্স শিট থাকা চাই।
-
স্পন্সর করলে কেমন টাকা খরচ হবে ?
সেটা প্রতিষ্ঠান বুঝে যে কার থেকে নেয়। কোন আত্তয়ন স্বজন যদি চায় তাদের রিলেটিভকে বিনা পয়সায় সেটা করবে তাহলে তও ফ্রি তে ই পেয়ে গেলেন আর কিনতে হবে বা ল- ফার্মের সাহায্য নিলে সেটা অনেক বায়বহুল হয়ে যায়। শহর বেধে স্পন্সর এর দাম কম বেশি হয় আবার। যেমন নিউইয়র্কে ৮-১০ হাজার ডলারের মধ্যে সেটা মেনেজ হয়। ক্যালিফোর্নিয়াতে সেটা ১৫-১৬ হাজার ডলারে।
-
EB-3 এর স্পন্সর বাদে আর কি কি খরচ আছে ?
আপনি যদি স্পন্সর লো ফার্ম থেকে মেনেজ করেন তাহলে তারা প্যাকেজ হিসাবে পুরো কাজটি করে দিবে। স্পন্সর + তাদের সার্ভিস চার্জ মিলিয়ে আপনি ১৫-২০ হাজার ডলারের মত মোট খরচ আসবে। আপনাকে এই টাকা তা কিস্তিতে দেয়ার সুযোগ হবে, ফাইল এর কাজ শুরুঅ কন্ট্রাক বাবদ ৫০০০ ডলার অগ্রিম আর বাকি টাকা ধাপে ধাপে কাজ শেষ হবে আপনি পরিশোধ করে দিবেন, কিভাবে কত করে পেমেন্ট দিতে হবে সেটা চুক্তিপত্রে লিখা থাকবে ক্লিয়ারলি।
লয়ারের ফিস বাবদ আরও কিছু টাকা এক্সট্রা লাগবে সেটা হলঃ
লেবার সার্টিফিকেশান এর আগে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চাকুরীর বিজ্ঞপি দিতে হয়। এক মাসের মত পত্রিকায় বিজ্ঞপি দিতে হয় সেটার ফি আপনাকে দিতে হবে।
এখানে ১০০০-২০০০ ডলার খরচ হবে। প্লাস ফাইলিং ফিস বাবদ খরচ আছে 700$।
কথা অনেক বলে ফেললাম। আসলে ইন জেনারেল সবার জন্য কিভাবে আমেরিকায় সেটেল হওয়া যায় এটা নিয়ে এই ওভার ভিউ দেয়া। এখন প্রশ্ন থাকতে পারে আমি কোয়ালিফাইড হলেও কি আমার কোন টাকা ইনভেস্ট/খরচ করতে হবে ? উত্তর হচ্ছে না । আপ্নি যদি অন্য কোন ক্যাটাগরিতে নিজের যোগ্যতায় স্পন্সর মেনেজ করে নিতে পারেন তাহলে আপনাকে কোন টাকা খরচ করতে হবে না।
আপনাদের নিজে পড়ার সারথ্যে কিছু লিংক শেয়ার করছি জাদে ধারনা নিতে পারেনঃ
- আমেরিকান ইমিগ্রেশন সম্পর্কে জানতেঃ https://www.uscis.gov/
- আমেরিকান গ্রিন কার্ড সম্পর্কে জানতেঃ USCIS এই লিংক থেকে পড়তে পারেন।
- ESTA সম্পর্কে জানতেঃ OFFICIAL ESTA APPLICATION
- লেবার মার্কেট সার্টিফিকেশান সম্পর্কে জানতেঃ Foreign Labor Certification USA
@বাকি প্রসেস বা উপায় নিয়ে নেক্সট পার্ট লিখব অন্য দিন – সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।